ভাদ্রেশ্বর দত্ত ওরফে ভাদ্র ছিলো এলাকার লালু ভুলু ছেলে। ছোটবেলায় পড়ে যাওয়ার ভয়ে সে ঠাকুমার সাথে দাঁড়িয়ে খেলাই দেখত। একটু বড়ো যখন হলো সে নিজের ব্যাট বল নিয়ে আসত বটে কিন্তু কেউ তাকে দলে নিতে চাইত না। কারন আউট হয়ে গেলে হয় তাকে দ্বিতীয় বারের জন্য সুযোগ দিতে হবে নতুবা সে ঠাকুমা কে ডেকে সে কান্নাকাটি করে ব্যাট বল নিয়ে বাড়ি হাঁটা দেবে। স্কুলে সহপাঠী দের কাছেও সে ছিল অপছন্দের পাত্র। সময়ে ক্লাসে ঢোকা থেকে প্রতি পিরিয়ডে স্যার কে হোমওয়ার্কের কথা মনে করিয়ে দেওয়ার কারণে পিছনের সারিতে বসা ছাত্রদের মধ্যে ভাদ্র কে নিয়ে ক্ষোভের সীমা ছিল না। কলেজে গেলেও তার অবস্থার পরিবর্তন হলোনা, মায়ের হাত ধরে যাওয়া তাকে হাসির খোরাক করে তুললো এলাকায়। ধীরে ধীরে তার মাথায় টাকা পড়তে লাগলো আর সেই সাথে সাথেই সে সরকারি চাকরির প্রস্তুতি নিতে লাগল।
আজ পাঁচ বছর পর ভাদ্র ব্যাংকে কর্মরত। টাক পড়ে এখন সে টেকো ভাদ্র নামে পাড়ার ছেলে ছোকরা দের কাছে পরিচিত। তার বাবার বন্ধুর মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক হলে পাড়ায় রটে গেলো সরকারি চাকুরি জীবি ভাদ্র বাড়িতে অল্প বয়সী সুন্দরী মেয়ে আনছে।
আজ ভাদ্রের বৌভাতে সবাই দেখল কথাটা সত্যি। পঁয়ত্রিশের ভাদ্রের হবু স্ত্রীর বয়স মেরেকেটে পঁচিশ।
পাড়ার ক্লাবের সেইসব ছেলেরা যখন ভাদ্রের এহেন টাক মাথার সরকারি চাকুরি করা কাকুর বিয়ে নিয়ে ফেসবুকে খিল্লি করার পরিকল্পনা করছে তখন দেখলো কোন এক বৃদ্ধাশ্রমের আমন্ত্রিত বুড়ো বুড়িরা প্রান খুলে ভাদ্রের টাক মাথায় হাত দিয়ে আশীর্বাদ করছে।