মল্লিক দের বাড়িতে রমা বিয়ের আগে থেকেই কাজ করছে। নিজের বাড়ির কাছে বিয়ে হওয়ায় ঝি গিরির কাজ টা ছাড়লো না সে। ভ্যান চালক স্বামীর একার উপার্জনে যে দুই থেকে সংসার তিনে গেলে চলবেনা তা ভালোই বুঝেছিল রমা। তাই ঠিক করলো শ্বশুর বাড়ি থেকে সে রোজ মজিদ পাড়ায় কাজে যাবে। মল্লিকদের বাড়ির সবাই রমার বিয়েতে তার মা কে সাহায্য করেছিল । বিয়েতে আসবে কথা দিয়েছিল বাড়ির গিন্নী রেহেনা মল্লিক কিন্তু রমজান মাস পড়ে যাওয়ার কারণে কারোর আর যাওয়া হয়ে ওঠেনি। কিন্তু বিয়ের পরে পিতৃহীন রমা রেহেনা খালার ঋণ শোধাতে কাজে পুনরায় যোগ দেবে জানালো।
আজ রমার ছেলের বয়স ছয় বছর। মল্লিক দের ছোট ছেলে সাদিকের একমাত্র মেয়ে আনজুমানের আঁকিকা তে দুশো লোকের সমাগম। বিরিয়ানি, চাঁপ, কোর্মা, ফিরনির খুশবু তে ভরে গেছে গোটা মহল্লা। রেহেনা রমাকে তার মা ও ছেলেকে নিয়ে আসতে বলেছিল।
মা অসুস্থ হবার কারণে রেহেনা তার ছেলেকে নিয়ে এসেছিল। সাথে এনেছিল আঞ্জুমানের জন্য উপহার হিসেবে পোশাক। গিফটের প্যাকেট রেখে রেহেনা, রমা কে ঘরের কোনে বসতে বলে দুই থালা বিরিয়ানি বড় বৌমা আলেয়ার হাতে পাঠিয়ে দিল। রমা কাজে এলে ঘরের এই কোনে বসেই টিফিন খেতে খেতে টিভি দেখে। কিন্তু আজ তার ছেলেকে নিয়ে ঐ ভাবে বসতে দ্বিধা বোধ করলো। কিন্তু চারদিকে জায়গা খালি দেখতে না পেয়ে দেরি হলে ট্রেনে ভিড় হবে ভেবে সে বসে পড়ল আয়ুশ কে নিয়ে। আসলে ট্রেন নয় তার মনে হলো উৎসবের দিনে তাদের মা ছেলেকে নিয়ে কারোর কোন মাথা ব্যথা নেই, কারন আর পাঁচটা দিনের মত ছেলের সামনে আজকেও সে ঝি।
হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গল্পঃ