রাইহান ইসলাম ধর্মে জন্মালেও কোনদিন নিজের ধর্মের আচার অনুষ্ঠান বা নিয়ম কানুন মেনে চলেনি। বাড়িতে আম্মি আবেদা বেগম নামাজ,রোজার সাথে প্রত্যক্ষ ভাবে যুক্ত থাকলেও আব্বা রবিউল করিম নিজে সেইভাবে কোনদিন ধর্ম মেনে চলেন নি। জাকাত ঠিকঠাক দিলেও বাকি নিয়ম গুলি পালনে তিনি ব্যর্থ। যদিও তার পিছনে শারীরিক অসুস্থতা একটি প্রধান কারন। পুত্র রাইহান ছোট বেলায় দাদু নবিউল করিমের সাথে নামাজ আদায় করতে যেত, রোজা রাখত কিন্তু দিনে দিনে দুর্ভিক্ষ, মহামারী, যুদ্ধ এসবে আল্লাহর নির্বিকার থাকাটা তাকে ভাবিয়ে তুললো। উল্টো সে দেখল যারা ন্যায়ের পথে চলে তাদের জীবনে ভোগান্তি বেশি। অথচ যারা অন্যায় করছে দিব্যিই গা এলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রথমে নানারকম জটিলতার সম্মুখীন হয়েও সে ধর্মে বিশ্বাসী ছিল কারন তার মনে হয়েছিল আল্লাহ তাদের ইমতেহান নিচ্ছে। কিন্তু মায়ের জটিল অপারেশনের সময় যখন তাদের অর্থের প্রয়োজন পড়লো তখন তাদের কেনা এক আম বাগান বিক্রি করতে গিয়ে তাদের এক হাজী জ্ঞাতী বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাদের সেই আত্মীয় দের অবস্থা ছিল যথেষ্ট স্বচ্ছল তথাপি বলপূর্বক এক মুহুরিকে টাকা দিয়ে কৌশলে জমি নিজের নামে আদালতে প্রমান করলো। ঘটনাচক্রে ঐ মুহুরি সাদাত আলি একজন নামাজী ব্যক্তি ছিলেন তাই এহেন দুজন ধার্মিক ব্যক্তির চক্রান্তের ফলে তার মায়ের চিকিৎসার যে বাধা সৃষ্টি হলো তা তাকে ইসলাম বিমুখী করে তুললো।
ধীরে ধীরে তার মুসলিম সমাজে বহিষ্করন ঘটলো আর ক্রমশ বেড়ে উঠতে লাগল হিন্দু সম্প্রদায়ের বন্ধু বান্ধব। তাদের সাথে পুজোয় ঠাকুর দেখা থেকে শুরু করে মন্দিরে পুজো দেওয়া সব কিছুই তাকে সনাতন ধর্ম সম্বন্ধে আবেগঘন করে তুললো। কিন্তু এখানেও সে দেখলো গোঁড়া কিছু হিন্দু ধর্মাবলম্বী তার এই গোমাংস খেয়ে মন্দিরে প্রবেশ করা বা হিন্দু ধর্মের কুসংস্কার গুলোর সমালোচনা করা এবং কট্টর পন্থীদের বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলাটা মেনে নিতে পারছে না। তার মনে হলো কর্মফলের উপর যদি ভিত্তি করে পাপ পুণ্যের বিচার হয় তবে বৌদ্ধ ধর্ম তার জন্য যথোপযুক্ত। কারন সে যেরূপ জীবন যাপন করছে তাতে অষ্টাঙ্গিক মার্গ তার তার দর্শনের সাথে মিল খায়। তাই সে ঠিক করলো জীবনে সে বাঁচবে মুসলমান পরিচয়ে, আচার অনুষ্ঠান মানবে হিন্দুদের মত করে আর কর্ম করে যাবে বৌদ্ধ ধর্ম মেনে।
আজ মৃত্যুর পর বিচার বসেছে রাইহান রাজীব রেনোং কে নিয়ে যেখানে তার বিচার কে করবে সেই নিয়ে তিন ধর্মের দেবতাদের মধ্যে লড়াই শুরু হয়েছে।
চুলচেরা বিশ্লেষন
ধন্যবদান্তে
গভীর অর্থ