ভুবন জামাই শ্বশুরবাড়িতে বিশেষ পাত্তা পেতো না। সামান্য মুদির দোকানে যা আয় তাতে বড়লোক শ্বশুরবাড়িতে বিশেষ কারুর স্নেহের পাত্র হয়ে উঠতে পারেনি। আসলে মালিকের দোকানের কর্মচারী হিসাবে মেয়ের বিয়েতে ফাই ফরমাশ খাটার জন্য একসময় নিমন্ত্রিত হয়েছিল ভুবন চ্যাটার্জী। কিন্তু বিয়েতে পণ নিয়ে দু পক্ষের মধ্যে বচসায় সরল সোজা ভুবন মালিক শান্তিলাল বসাক কে অনুরোধ করলেন যেন তিনি এমন বাড়িতে মেয়েকে বিয়ে না দেন যেখানে তাঁর মেয়েকে বৌমা নয় পণ্য হিসাবে দেখবে তার শ্বশুর বাড়িতে। বৌ বাজারের বসাক জুয়েলার্সের কর্নধার রেগে ভুবন কে কিছু বলতে যাচ্ছিল হঠাৎ মেয়ে সোমলতা এসে বাবাকে থামিয়ে বললো যে সে ভুবন বাবুর সাথে একমত এবং করজোড়ে হবু বর, শ্বশুর এবং পুরো বরযাত্রী কে স্থান ত্যাগের অনুরোধ করলেন। তারপর ভুবনের দিকে ফিরে বললো যে আপনার মত আদর্শবান পুরুষ যদি বাকি জীবনে তার পথ চলার সঙ্গী হয় তবে সে নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করবে। সকলের সামনে এহেন প্রস্তাবে প্রথমে শান্তি বাবু অশান্ত হয়ে উঠলেও পরে লগ্ন ভ্রষ্ট মেয়ের কথা ভেবে রাজি হয়ে গেলেন। ভুবন বিয়েতে পেলো বাবার জন্যে রেডিও,চোখে কম দেখতে পাওয়া মায়ের জন্য টর্চ আর নিজে যেটা নিলো বারবার ভুলে হারিয়ে আসে যে সেই ছাতা।
আজ ভুবন বাবুর মেয়ের পালা। বিয়ের পর শ্বশুরের দোকান ছেড়ে যত সামান্য পুঁজি নিয়ে মুদির দোকান খোলেন নিজের গ্রামে। ইংরেজি সাহিত্যে এম.এ করা ভুবনের কন্যার পাকা দেখা চলছে। মামার বাড়ির পক্ষ থেকে দাদু দিদা ছাড়া কেউই আসেনি। হবু নাত জামাইয়ের সামনে নিজের মেয়ের বিয়ের গল্প করছিলেন খোশ মেজাজে শান্তি লাল। সব শুনে দেনা পাওনার কথা ওঠার আগেই রেজিস্ট্রি কাগজে চোখ বন্ধ করে সই করে দিলো ভুবনের জামাই সৌমেন্দু।
Educational subject
Yes