অভাবী শ্যামল একমাত্র কন্যা সুরভীর বিয়ে দিতে বেশ আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হলো। রসায়নে স্নাতক সুরভীর পরিচয় হয় কলেজে তার সমবয়সী বাণিজ্য বিভাগের ছাত্র রাতুলের সাথে। রাতুল যেখানে ধনী চাল ব্যবসায়ী পরিবারের কনিষ্ঠ সন্তান সেখানে সুরভীর বাবা সামান্য অটোচালক। পাঁচ বছর হলো পুরানো তেলের অটো বিক্রি করে তার সাথে আরও কিছু টাকা যোগ করে এই অটো কিনেছে। তাই মেয়ের এহেন বড়লোক বাড়িতে কিভাবে বিয়ে দেবে সেই চিন্তায় রাতের ঘুম চলে গেল। যদিও রাতুলের মা রমিতা রায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন বাড়ির লক্ষী কে ঘরে তুলতে কোনরকম পন তাদের দাবির মধ্যে থাকবে না। নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী যেটুকু তিনি দিতে পারবেন দেবেন কারন একেবারে খালি হাতে পাঠানোর মানুষ শ্যামল দাস নন তা এলাকায় পাত্রীর খোঁজ নিতে এসে জেনে গিয়েছিলেন রাতুল দের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত ম্যানেজার পরিমল কুন্ডু। কিন্তু দেড়শো বরযাত্রীর জন্য খাসির বন্দোবস্ত যে করতেই হবে সে কথাটা রাতুল এসে হবু শ্বশুর মশাই কে নিজেই জানায় ।
সামান্য এই দাবী যে না রাখলে তার আর মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে সম্মান থাকবে না সেটা বুঝে তিনি ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। হিসাবে দেখলেন সব মিলিয়ে তার খরচ প্রায় দশ ছুঁই ছুঁই কারন গহনার যা দাম গড়াতে গেলেই তিন আর স্ত্রীর যা সম্বল ছিল তা দিয়েই তার অটো কেনা। তাই শেষমেশ টাকার ব্যবস্থা করতে তিনি মহাজন কালিধর ঘোষালের দ্বারস্থ হলেন কিন্তু বন্ধক দেওয়ার মত কিছু না থাকায় অগত্যা তাকে হতাশ হয়েই ফিরতে হচ্ছিল। রাস্তায় এলাকার মাতব্বর ধিতশ্রী বাড়ুজ্যের সাথে দেখা হলে জোর করে তার থেকে সব কথা শুনে বললো ঠিক আছে তাকে সে দশ লাখের বন্দোবস্ত করে দেবে যদি এখন তাকে সে এক লাখ টাকা দিতে পারে। সব শুনে শ্যামল চায়ের টাকাটা দিতে দিতে হেসে বললো, যদি তার কাছে এক লাখ থাকত তাহলে সে মহাজনের থেকে দশ নয়, নয় লাখ টাকা ধার নিত!