স্থূলকায় শরীরের মিনু সেই ছোট বেলা থেকেই হাস্য রসের শিকার। খাওয়া দাওয়া থেকে শুরু করে গাড়িতে বেশি জায়গা নেওয়া সব জায়গায় মজার খোরাকি হতো সে। কিন্তু বাস্তব ছিল সম্পুর্ণ অন্যরকম। সিস্টের সমস্যা জনিত কারণে তার শরীর এরূপ আকার ধারণ করেছে ধীরে ধীরে। শুধু তাই নয় নারীত্বের অলঙ্কার পিরিয়ড বা ঋতুচক্র থেকে তার শরীর বঞ্ছিত। উল্টে হয়তো পুরুষ হরমোনের উপস্থিতির কারণে দাড়ি গোঁফ উঠতো তার মুখে। ছোটো বেলায় নানা অনুষ্ঠান বাড়িতে তার আত্মীয় স্বজনদের থেকে বাঁকা কথা শুনতে হয়েছে। গাড়ি তে উঠতে দেখলে পাড়া প্রতিবেশীর মুখে শোনা গেছে দুটো ভাড়া দিতে হয় নাকি তাকে। স্কুলে সহপাঠী রাও তার জন্য বসার জায়গা রাখত না। কিন্তু এত কিছুর পরে শান্ত স্বভাবের মিনু ছিল শর্ট পাট খেলায় পারদর্শী। শক্ত পেশীর উপর ভর করে অনায়াসে লোহার বল সে ছুঁড়ে দিত। জেলার মধ্যে খেলায় সে সবসময় প্রথম হতো। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর হাল ফিরলো না। মেয়েদের কলেজে এসেও তার কোনো বন্ধু হলো না। নবীনবরণ উৎসবে সিনিয়র তো দূরে থাক নিজের ব্যাচ মেটরা কেউ এলো না পরিচয় করতে। সবাই যখন সেলফি তুলতে ব্যস্ত একা মিনু তখন উপস্থিত হলো কলেজ ক্যান্টিনে আর সেখানে পরিচয় ঘটলো কলেজের স্পোর্টসের কোচ আসিফ ইকবালের সাথে। মিনু কে মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখে তার পাশে বসে পরিচয় করলো তার সাথে। সব কথা শুনল তার মুখে। তিনি তৎক্ষণাৎ তাকে হাত ধরে নিয়ে এলেন কলেজের জিমে। তাকে জিম করার পরামর্শ দিয়ে তিনি রোজ তাকে শর্ট পাট খেলায় ট্রেনিং দিতেন।
আজ সাত বছর পর সারা দেশ মিনু ও তার প্রশিক্ষক আসিফ ইকবালের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আজ যে দেশের মেয়ে মীনাক্ষী বিষ্ণু ওরফে মিনু অলিম্পিক থেকে সোনা জিতে আনছে। আর তার বাড়ির সামনে সেলফি তোলার জন্য ভীড় জমিয়েছে পাড়া প্রতিবেশী থেকে স্কুল কলেজের সেইসব সহপাঠী।
দুর্দান্ত শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত
ধন্যবাদ আপনাকে গল্পের শেষ অবধি গভীর ভাবে পড়ার জন্য