কর্ম ক্ষেত্র হোক বা বাস্তব জীবন কোনো কিছুতেই অর্ঘ্য স্থির হতে পারছে না। যখন থেকে সে স্বাধীন ভাবে চিন্তা করবে শুরু করলো, নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নিজেই নেবে ঠিক করলো তখন থেকেই এই সমস্যার সম্মুখীন সে। তাই চাকরি পাবার পর তার এই সমস্যা যখন আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠলো তখন সে মনোবিদ কৃষানু সিনহার দ্বারস্থ হলো। ডাক্তার বাবু কে সে বললো প্রথম সে এই সমস্যায় ভোগে একাদশ শ্রেণীতে কি বিষয়ে পড়াশোনা করবে সেই নিয়ে। সাইন্স নেবে না আর্টস নাকি বাবার মত কমার্স। অবশেষে বন্ধু দের দেখাদেখি সায়েন্স নিল সে। সেখানেও হলো বিপত্তি, পিউর নাকি বায়ো নেবে সে নিয়ে তার চিন্তা। আবার কানাঘুষা তে শুনলো কেউ কেউ কম্পিউটার সায়েন্স বা স্ট্যাটিসটিক্স নিচ্ছে। আবার ভূগোল ও শুনলো নেওয়া যায়। যাইহোক শেষমেশ পিউর সায়েন্স নিয়ে দ্বিতীয় বারের চেষ্টায় উতরে গেল সে। এরপর সে আরও সতর্ক হলো কলেজে ভর্তি হবার আগে। কিন্তু এবারেও বোধগম্য হচ্ছিল না কি নিয়ে পড়বে! ইন্জিনিয়ারিং নাকি মেডিকেল না অনার্স। আচ্ছা প্লেন গ্ৰ্যাজুয়েশান যদি করা যায়। অনার্স নিলে কিসে নেবে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি, বায়ো নাকি ম্যাথ। ওদিকে লিটারেচার তার বড় প্রিয় তাই ইংরেজি আর বাংলা অনার্স নেহাত মন্দ হবে না । কিন্তু সায়েন্স নিয়ে পড়ে লিটারেচার অনার্স নিলে লোকে বলবে কি! মেডিকেল তো অধ্যাবস্যায়ের ফল তাই ও তার দিয়ে হবে না। অনার্সে আবার নম্বর ওঠে না এইসব ভেবে শেষমেশ ইন্জিনিয়ারিং এর দিকেই গেল সে। কিন্তু আবার কনফিউশন কি স্ট্রিম নেবে তাই নিয়ে। তার ইচ্ছা মেকানিকাল, বাবা চান ইলেকট্রনিক্স, মা আইটি আর মামা ইলেকট্রিক্যাল। শেষে বাবার ইচ্ছা পূরন করে ইলেকট্রনিক্স নিয়ে এক ডজনের ওপর সাপ্লি পেয়ে পাঁচ বছরের প্রচেষ্টায় বি.টেক পাশ করলো সে। এবার তার চিন্তা এলো প্রাইভেটে চাকরি করবে না সরকারি। প্রাইভেটে খুব খাটুনি আর সরকারি তো গেট ছাড়া নেয় না। তাই এবার সে ঠিক করলো সরকারি এমনি যেসব পরীক্ষা আছে সেই গুলো দেবে কিন্তু আবার মাথায় চিন্তা কেন্দ্রীয় সরকারের পরীক্ষা, না ব্যাংক নাকি রাজ্য সরকার। ব্যাংক ঘনঘন ট্রান্সফার করায় সুখ নেই তাতে আর রাজ্য সরকারের তো পরীক্ষাই বন্ধ। তাই অগত্যা কেন্দ্রীয় সরকারের পরীক্ষা গুলোতে বসবে সে। কিন্তু সমস্যা হলো ইউটিউবে বলছে যে কোনো একটা পরীক্ষা টার্গেট করতে যেমন রেল, স্টাফ সিলেকশন আর না হলে ইউ.পি.এস.সি। রেল তার পছন্দ নয়, ইউ.পি.এস.সি ত দিল্লি না গেলে হবে না তাই সিজিএল দেবে ঠিক করলো। কিন্তু এখানে অনলাইন পরীক্ষায় তার অসুবিধা হতে লাগলো তাই ছেড়ে শেষমেশ রাজ্য সরকারের পিএসসি দিয়ে বন দপ্তরে ফরেস্ট রক্ষক হিসাবে যোগদান করেছে কাজে।
সব শুনে ডাক্তার বাবু জিজ্ঞেস করলেন এখন তাহলে সমস্যা কোথায়? উত্তরে অর্ঘ্য কিছুটা ইতস্তত বোধ করে বললো বৌ নির্বাচনে!